শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
সীমানা পুন:নির্ধারণের জন্য অপেক্ষা করছে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৬ জেলার ৩৮টি আসন পুন:বিন্যাসের সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশন। আওয়ামী লীগ এই পুন:বিন্যাসের পরপর তাদের প্রার্থী তালিকা মোটামুটি চূড়ান্ত করবে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, মাসিক জরিপের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকার কাটাছেড়া চলছেই।
১৪ দলীয় জোটগত ভাবে নির্বাচন করলে আওয়ামী লীগ শরীকদের জন্য ২০ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ আসন দিতে চায়। ৭৫টি আসন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত। কিন্তু বাকি ২০০ আসনে প্রার্থীদের নামের তালিকার কাটাছেড়া চলছেই। ৬ মাস আগেও নিশ্চিত ছিল প্রার্থিতা, কিন্তু দলের নিজস্ব উদ্যোগে পরিচালিত জরিপে পিছিয়ে পড়ায় তাঁর নামও প্রার্থী থেকে বাদ যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এবার আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী তালিকায় চমক দেখাবে। অনেক আসনেই দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত এবং ত্যাগী নেতা কর্মীদের এবার মনোনয়ন দেওয়া হবে। পাশাপাশি ক্লিন ইমেজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের প্রার্থী তালিকায় রাখা হয়েছে। তবে, একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, তিন রকম তালিকা আওয়ামী লীগ করে রেখেছে। প্রথম তালিকা হলো বিএনপি যদি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নেয়। সেক্ষেত্রে প্রার্থিতা বাছাইয়ে আওয়ামী লীগ কোনো ঝুঁকি নেবে না। যে এলাকায় যিনি জনপ্রিয়, অর্থ আছে এবং সামাজিক প্রভাব প্রতিপত্তি আছে এমন ব্যক্তিদেরই প্রার্থী করা হবে। এই তালিকায় দলের নিষ্ঠাবান এবং ত্যাগী কর্মীদের খুব একটা ঠাঁই হবে না। বরং, বিএনপির প্রার্থীর বিপুল অর্থের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেন এমন প্রার্থীদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে। এরকম খসড়া তালিকাতে ব্যবসায়ী, সাবেক আমলা, অবসর প্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, সেলিব্রেটিরাই প্রাধান্য পাবেন। এমনকি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত নন, কিন্তু জনপ্রিয় এরকম প্রার্থীদেরও ভিড়ানো হবে। দ্বিতীয় তালিকা হলো বেগম জিয়া ছাড়া খণ্ডিত বিএনপি নির্বাচন করলে। এই তালিকাতে ১০০টি আসনের বাইরে তরুণ, সাবেক ছাত্রনেতা দলের ত্যাগী কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। তবে, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি এবং অন্যান্য পেশাজীবীদের মধ্যে যারা সরাসরি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত, তাদেরকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। দলের বাইরে থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। আর তৃতীয় তালিকা তৈরি করা হয়েছে এই বিবেচনায় থেকে যে, যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ জোটগত নয় বরং একক নির্বাচন করবে। এই তালিকায় দলের সার্বক্ষণিক নেতা, কর্মী ও জনপ্রিয় তৃণমূলের নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, জরিপের ভিত্তিতে যে তালিকা তার বাইরেও দলের সভাপতি তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব দিবেন। তৃণমূল থেকে ভোটের মাধ্যমে তিনজনের নাম নেওয়া হবে। এই তিন জনের নামের সঙ্গে জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতেই প্রার্থিতা চূড়ান্ত হবে। এখন কেউ যদি তৃণমূলের ভোটে প্রথম হন, আর জরিপেও এগিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর প্রার্থী হওয়া হবে মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু অভিযোগ আছে তৃণমূলের নির্বাচন কমিটি অনেক ক্ষেত্রেই পক্ষপাতদুষ্ট, কোন প্রার্থীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাঁরা নাম পাঠায়। একারণেই দলের সভাপতি এই জরিপ প্রক্রিয়া চালু করেছেন। এর ফলে দলে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে তৃণমূলের নির্বাচকমণ্ডলী এবং কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড সর্তক থাকবে।